ওয়ারফেজ বাংলাদেশের অন্যতম একটি জনপ্রিয় হেবি মেটাল ব্যান্ড। ১৯৮৪ সালের ৫ জুন ওয়ারফেইজ গঠিত হয়। ১৯৯১ সালে Warfaze নামক সঙ্গীত-সঙ্কলন (অ্যালবাম) প্রকাশের মাধ্যমে দলটির যাত্রা শুরু। এই সঙ্গীত-সঙ্কলনটি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই পর্যন্ত ওয়ারফেইজ সাতটি সঙ্গীত-সঙ্কলন প্রকাশ করেছে,সর্বশেষ ছিলো সত্য যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে শ্রোতামহলে। পথচলা-২ নামক নতুন সঙ্গীত-সঙ্কলনের কাজ চলছে বলে জানা যায়,বছরের শেষ নাগাদ প্রকাশ পেতে পারে। সময়ের সাথে সাথে দলটির সদস্যতালিকাতে (লাইন-আপ) ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
প্রথম সদস্যতালিকার অধিকাংশই সেন্ট যোশেফ স্কুলের ছাত্র ছিলেন। দলের বর্তমান সদস্যরা হলেন ইব্রাহীম আহমেদ কমল (লিড গিটার), শেখ মনিরুল আলম টিপু (ড্রামস), সামস মনসুর (কিবোর্ড), নাঈম হক রজার (বেস গিটার), সামির হাফিজ, সৌমেন দাস ((লিড গিটার),) এবং পলাশ নূর (ভোকাল)। ব্যান্ডটি এ পর্যন্ত আটটি সঙ্গীত-সঙ্কলন বের করেছে যার মধ্যে সাতটি স্টুডিওতে ধারণকৃত সঙ্গীত-সঙ্কলন এবং একটি বাছাইকৃত সংগীত-সঙ্কলন (কম্পাইলেশন অ্যালবাম) রয়েছে। ওয়ারফেইজ সঙ্গীতদলটি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন স্থানে সঙ্গীত পরিবেশন অনুষ্ঠানে (কনসার্ট) অংশ নিচ্ছে্।৩৮ বছরের পথচলায় ব্যান্ডটি সম্পর্কে চলুন জেনে নিই ।
প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর ১৯৯১ সালর ২১ জুন ওয়ারফেজ নামের অ্যালবাম দিয়ে অডিও বাজারে যাত্রা শুরু করে তারা। যেখানে সব গানই হার্ড রক আর হেভি মেটাল। ‘একটি ছেলে’, ‘বসে আছি’, ‘বিচ্ছিন্ন আবেগ’, ‘স্বাধিকার’, ‘কৈশোর’,‘বৃষ্টি নেমেছে’ গানগুলো রীতিমতো সাড়া ফেলে দেয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে। একটু অন্য রকম বাংলা গানের স্বাদ পেলেন শ্রোতারা। কিছু শ্রোতা তো শুরুতেই তা লুফে নিলেন, অল্পদিনে এই গান এক কান থেকে অন্য কানে পৌঁছে যায়। নতুন কথা, নতুন সুর। সব মিলে দারুণ সাড়া ফেলে চারদিকে। একটি নতুন ব্যান্ডের নাম জানতে পারে সবাই।
প্রথম অ্যালবামটা শ্রোতাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়ার পর ওয়ারফেজের সদস্যরা সাহসী হয়ে ওঠেন। এ সময় নতুন অ্যালবামের কাজ হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা করে তারা। কিন্তু উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যে কমল ও রাসেল দেশ ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। অবশ্য ব্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়নি তাঁদের। একসময় ব্যান্ডের প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে ছুটিতে দেশে আসেন তাঁরা। শুরু হয় দ্বিতীয় অ্যালবামের কাজ। নাম দেওয়া হয় ‘অবাক ভালোবাসা’। অ্যালবামটি দেশের হেভি মেটাল ব্যান্ড সংগীতের ইতিহাসের অন্যতম ব্যবসাসফল অ্যালবাম।
অ্যালবাম রিলিজের পরপরই রাসেল ব্যান্ড ত্যাগ করলে তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করতে ব্যান্ডে যোগদান করেন ফুয়াদ ইবনে রাব্বি। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের আরেক সফল অ্যালবাম বের করে তারা। ‘জীবনধারা’ বাজারে আসে। এবার একটু নতুন অ্যালবামটি মূলত মেলোডি-নির্ভর ছিল। তবে ‘জীবনধারা’ এই অ্যালবামের শিরোনাম গানটিসহ ‘দিন বদলের পালা’, ‘হেঁয়ালি’, ‘নিঃশব্দে’ হেভিমেটাল গান ছিল। সেবার মূলত গান নিয়ে পরীক্ষা করেছিল ওয়ারফেজ। হার্ড রকের সঙ্গে মেলোডির মিশ্রণ। শ্রোতারা পেয়েছিলেন ‘জননী’, ‘মৌনতা’, ‘ধুপছায়া’, ‘জীবনধারা’সহ বেশ কিছু অসাধারণ গান। তবে এই অ্যালবাম বাজারে আসার পরপরই বাবনা যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। এই বছর ‘ধুন’ নামে একটি মিশ্র অ্যালবামে ওয়ারফেজের ‘মুক্তি চাই’ এবং ‘মনে পড়ে’ গান দুটি জনপ্রিয়তা পায়।