বিয়ে হল আজ সাতটি বছর,
বাচ্ছা আসেনি কোলে।
দিন কাটে তাই পিয়াস মিয়ার,
নিদ্রা আহার ভুলে।
শ্বাশুড়ী বলল- যাওনা বাবা,
পাগলা পীরের কাছে,
খুলে বল তারে মনের কথা,
ইচ্ছে যত আছে।
পরের দিন’ই পিয়াস মিয়া,
ছুটল পীরের বাড়ি।
সাথে নিয়েছে ফলফলাদি,
মিষ্টি রসের হাড়ি।
পৌঁছল এসে ঠিক দুপুরে,
যেইখানে আছে পীর।
দেখল সেথা খানকা ঘিরে,
প্রচুর লোকের ভীড়।
পীরের হাতে সোনার আংটি,
গলায় টাকার মালা।
চেয়ারখানা শৌখিন বটে,
মেলা টাকার ঠেলা।
ভাবলো বসে পিয়াস মিয়া,
মুখে দিয়ে তার হাত।
পীরে তাকে বাচ্চা দিবে,
রক্ষা হবে জাত।
খানিক বাদে ডাক এসেছে,
পিয়াস মিয়া’ বলে।
সুড়সুড়িয়ে পীরের কাছে,
পিয়াস এল চলে।
বলল পীরেঃ- ‘কি চাই বাছা…??
আর্জি কি তোর বল।
ধনসম্পদ লাগবে নাকি?
ক্ষমতা রদবদল ??
পিয়াস মিয়া বলল উঠে;
খানিক গলা তুলে।’
বিয়ে হল আজ সাতটি বছর,
বাচ্ছা পায়নি কোলে।
যে করেই হোক একটি বাচ্ছা,
করুন আমায় দান।
রক্ষে হবে জাতটা আমার,
শান্ত হবে প্রাণ।
একটু হেসে বলল পীরে,
এই বুঝি তোর দাবী?
থাকতে আমি চিন্তা কিসের?
বাচ্ছা পেয়ে যাবি।
বেজায় খুশী পিয়াস মিয়া,
বলল হেসে তবে।
বলুন বাবা এখন আমায়,
কি কি করতে হবে ??
পীর শুধাল,‘এই নে তাবিজ,
বউয়ের গলায় দিবি।
অমুক তারিখ ওরশ আছে,
ছাগল নিয়ে যাবি।
আনবি সাথে হাদিয়ার টাকা,
ফলফালাদি আর।
আরও আনিস বউটাকে তোর,
করে দেব ফুঁক-ঝাড়।
ছাগল দিলাম, হাদিয়া দিলাম,
তাবীজ নিলাম ঢের।
বউয়ের পেটে বাচ্চা এল কিনা,
আজও পেলনা টের।
বছর তি’নেক চলেই গেল,
বাচ্চার নেই দেখা।
ক্লান্ত পিয়াস বুঝল এবার,
সবই ছিল ধোঁকা।
হায়রে মুমিন বুঝবি কবে?
পীরের বুদ্ধির চিকন ধার।
পীরের পূজা আর দরগাহ পূজা,
আজ মিলেমিশে একাকার।