৯০ দশক এমন একটা সময় যখন বাংলা ব্যান্ড মিউজিক রাজত্ব করতো ঠিক রাজার মতোই। অবসর কিংবা কাজের ফাঁকে, সুরে সুরে মাতোয়ারা থাকতো তখনকার প্রজন্ম। পাড়ায় কিংবা মহল্লার অলিতে গলিতে ছিলো ক্যাসেটের দোকান। নিত্য নতুন গান গুলোর প্রথম খোঁজই আসত সেই সব দোকান থেকে।
বর্তমান প্রজন্ম ব্যান্ড সংগীত যে ভাবে গ্রহণ করেছে, তার ভিত্তি রচনা হয়েছিল ৯০দশকেই। ৯০ দশকে মোট কতগুলো ব্যান্ড ছিলো সেটা বলা সম্ভব না হলেও ৬০টির অধিক জনপ্রিয় ব্যান্ডের নাম শোনা যায়। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ব্যান্ডের নাম ‘উচ্চারণ’। মুক্তিযোদ্ধা শ্রদ্ধেয় আজম খানের হাতে গড়ে ওঠে ব্যান্ডটি।
বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের বিস্তার শুরু হয় সেই ৭০ দশকে, কিন্তু পূর্ণতা পায় ৯০দশকে। রক, পপ, মেলোডি কিংবা হার্ডরক ঘরনার ব্যান্ড গুলোর জনপ্রিয়তা বেশি ছিলো বেশি।
নব্বই দশকের জনপ্রিয় ব্যান্ডের নাম গুলো বলতে গিলেই চলে আসে যে নাম গুলো –
উচ্চারণ, রেনেসাঁ, প্রমিথিউস, ইভস, চাইম, ডিজিটাল, অবসকিউর, ডিফারেন্ট টাচ, ফিলিংস, নোভা, মাইলস, আর্ক, সোলস্, ফিডব্যাক, দলছুট, সিম্ফনি, সাবকনশাস, বেনসন এন্ড হেজেস, উইনিং, অডেসি, অরবিট, প্রতিক্ষা, মনিটর সহ প্রায় ৬০ টি ব্যান্ড।
যারা আশি দশক এর প্রথম দিকে কিংবা মাঝামাঝি জন্মেছিলো তারাই আপন করে নিয়েছিলো ব্যান্ডগুলোকে।
৯০ দশক ব্যান্ড মিউজিকের স্বর্ণযুগ, ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালের অাগ পর্যন্ত বেশ কিছু লিজেন্ডারী ব্যান্ড এর অাবির্ভাব হয়েছে, পাশাপাশি ৮০ এএ দশক এ গঠন হওয়া বেশ কিছু ব্যান্ড ৯০ এ এসে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বর্তমান সময়ে ব্যান্ড মিজিকের জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে অাগের থেকে ,বিশেষ করে ২০০৬ এর পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ব্যান্ড মিউজিকের জনপ্রিয়তা ৯০ কিংবা যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি, যদিও পাইরেসির কারণে ব্যান্ডগুলো গান করার উৎসাহ পাচ্ছে না। তবে ৯০ দশক হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিকের ভিত্তি বলাই যায়।
২০০২ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ব্যান্ড মিউজিক একটা ধাক্কা খায়, বেশ কিছু লিজেন্ডারী মিউজিসিয়ান অতিমাত্রায় কমার্সিয়াল মিউজিক করা শুরু করে দেয়, তারপর ২০০৭ থেকে অাবার ব্যান্ড মিউজিক ঘুরে দাঁড়ায় অনলাইন রিলিজের উপর নির্ভর করে।
স্বর্ণযুগ বললে নব্বই দশকই স্বর্ণযুগ।
আর জনপ্রিয়তার কথা বললে অবশ্যই বর্তমান সময়টা বেশি জনপ্রিয়।
৯০দশক এ যখন ব্যান্ড মিউজিক মানুষ শুনতো তখন অনেকেই বলতো এগুলো চিল্লাচিল্লি কে শুনে, তাছাড়া এ্যালবামও পাওয়া যেতো না শহর ছাড়া, গ্রামে তো এক্কেবারেই চলতোনা, কিন্তু বর্তমানে গ্রামেও ব্যান্ড সব জনরারই শ্রোতা প্রত্যক্ষ করা যায়।